শিক্ষা দেশ ও জাতির উন্নয়নের জন্য, বাণিজ্যের জন্য নয়
বর্তমান দেশে অনুমোদিত অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখন আমলা, সরকারের একান্ত ঘনিষ্টজন ও ব্যবসায়িকদের নিয়ন্ত্রনে। তারা এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউবা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আবার কেউবা ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে নিয়োজিত। অনেকের মতে, তারা এইসব পদে যোগদান করে কেউ কেউ প্রতিষ্ঠানের ভিতরে নিয়োগবাণিজ্য, ভর্তিবাণিজ্য, তদবিরবাণিজ্য, ভুয়া সার্টিফিকেট বাণিজ্য, সকল ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি, নিজেদের সুবিধাপ্রাপ্তী, উন্নয়ন ফির নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অধিক অর্থ গ্রহণ ও তা আতœসাধ, টেন্ডারবাজি, প্রতিষ্ঠানের অর্থ নিজেদের একাউন্টে স্থানান্তর এবং প্রতিষ্ঠানের নানাবিধ সুযোগসুবিধা ভোগসহ নিরীহ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নামিদামি কিছু বিষয়ে পড়ানো ও ভর্তির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। কেউ বা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ক্যাম্পাস স্থাপন করে এলাকায় অন্যদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন ও অনুমোদনের ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করে শিক্ষার নামে একক আধিপত্ত বিস্তারের মাধ্যমে চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা নামের এই রমরমা ব্যবসা। যা প্রতিদিন কোন না কোন পত্রিকায় প্রকাশিত। কিন্তু ইহা প্রতিকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি-নির্ধারক বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জরী কমিশন (ইউজিসি) সক্রিয় থাকার পরির্বতে সরকারের মতের পক্ষে নীরব থাকা অধিক লক্ষনিয়। যা দেশে গুণগত মানের শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন ও শিক্ষা দানের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় বলে মনে করি। বিষয়গুলি সকল সরকারের আমলেই সমান হারে প্রযোজ্য।
সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সেক্টরের অনিয়ম-দুর্নীতির বেশ কিছু বিষয় আরও স্পষ্ট হয়েছে। টিআইবি এর তথ্য মতে, বেসরকারি উচ্চশিক্ষা খাতে যে ৬০ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং যে ১৬ দফা সুপারিশের কথা বলা হচ্ছে তার পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান না নিয়ে সংশ্লিষ্টদের উচিত উক্ত বিষয়গুলি তলিয়ে দেখা এবং সমাধানে প্রয়োজনীয় করণীয় ঠিক করা। যা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে অধিক জরুরী বলে মনে করি। যদিও এই কথাটি সত্য, বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে খোদ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে, যা ইতিবাচক। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি-অনিয়ম দূরীকরণে সকলে আন্তরিক হবেন এমনটিই প্রত্যাশা করি।
এক্ষেত্রে অপর আরো একটি বিষয় আপনাদের দৃষ্টি নিবন্ধন না করলেই নয়, বিভিন্ন সরকারের আমলে সরকার প্রধানরা তাদের নিজেদের দায় এড়াতে দেশে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, দপ্তর বা কমিশন তৈরী করেন ঠিকই, কিন্তু আসল নিয়ন্ত্রণটা রাখছে তাদের হাতেই। যা প্রতিষ্ঠানের কাজের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক কাজের পরিবেশ আনায়নের ক্ষেত্রে বড় ধরনের বাঁধার সৃষ্টি করে। আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় এইসব অনুমোদিত প্রায় অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো, সুযোগসুবিধা, উচ্চতর গবেষনা পরিচালনার যোগ্যতা, দক্ষ জনবল, উপযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার পরিবেশ নেই বললেই চলে। এইসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কেউবা ভাড়া বাড়ীতে, কেউবা মাকের্টে আবার কেউবা আবাসিক এলাকায় নামমাত্র কয়েকটি রুম ভাড়া নিয়ে সাইনবোর্ড টানিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা নামে টেক্স বিহীন রমরমা ব্যবসা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্দশ যেমন বিনষ্ট হচ্ছে, তেমনি উক্ত এলাকার পরিবেশ হচ্ছে বিপন্ন। যদিও বর্তমান সরকার অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের জন্য কঠোর অবস্থান নিয়েছেন, যা ইতিবাচক। অপর দিকে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ অথবা ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যদের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কোন যোগ্যতা, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা সম্পর্কিত অতীত অভিজ্ঞতা ও কোন ধারনা না থাকা সত্বেও অর্থ, ক্ষমতা, ঘনিষ্টতা ও দলীয় বিবেচনাকে অগ্রগাধিকার দিয়ে ঐসব বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন ও তা পরিচালনার দায়িত্ব ন্যস্ত করা হচ্ছে । যা মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ আনায়ন ও শিক্ষা দানের ক্ষেত্রে অন্তরায়। এক্ষেত্রে ইউজিসি কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদে এই ধরনের সদস্য অনুমোদনের ক্ষেত্রে তাদের নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অতীত অভিজ্ঞতা বিবেচনা করা জরুরী, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এই বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতারা ক্ষমতাবান হওয়ায় এইসব নীতিমালার তোয়াক্কা করেন না। যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানাবিধ দুর্নীতি অনিয়মের জন্য অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করি।
বর্তমান সরকারের আমলে বেসকয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দেওয়াকে সাধুবাদ জানাই। যা শিক্ষার্থীদের ভর্তিসঙ্কট রোধে ইতিবাচক। এই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের ক্ষেত্রে সরকারকে ইউজিসির সুপারিশ গুলিতে যথাযথ গুরুত্ব ও বিবেচনায় আনা উচিত। এখানে অপর একটি বিষয় বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগকৃত প্রশাসনিক প্রধানগণ ভিসি, প্রো ভিসি, ট্রেজারগণ ট্রাষ্টি বোর্ডের প্রেরিত মনোনীত সদস্যের প্যানেল থেকে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। যেহেতু এই নিয়োগে ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা থাকে, সেহেতু এই ধরনের পদে ব্যক্তি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আর্থিক অনিয়ম এবং তাদের নির্বাচিত প্রশাসনিক প্রধানগণ ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যদের হাতের খেলার পুতুল হিসেবে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রিয়াশীল থাকার সম্ভাবনায় অধিক বিরাজ করে। এক্ষেত্রে ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যরা প্রশাসনিক প্রধানদের বেছে বেছে নিয়োগ দেয় তাদের অনৈতিক ও অবৈধ কাজ ও সুবিধা হাসিলের জন্য। এইসব ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রশাসনিক প্রধানদের নিজস্ব কোন ইচ্ছা ও অনিচ্ছার কোন মূল্য থাকে না। তাই এই ধরনের নিয়োগের ক্ষেত্রে আরো স্বচ্ছতা আনা জরুরী বলে মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা বা লেবাসী বিদ্যানুরাগীদের ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি ও অনৈতিক কার্যকলাপের দরুন দেশের অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষার মান নিম্নগামী হচ্ছে, যা কাম্য নয়। অপরদিকে, এইসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পরিবেশ না থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়–য়া অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা একসময় সার্টিফিকেট নির্ভর হয়ে পরছে । ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি শিক্ষার মূল আদর্শ বাস্তবায়ন ও শিক্ষিত মানবসম্পদ গড়ার স্থলে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনিত হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক জাতি অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পেলেও প্রকৃত ও আর্দশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং তা থেকে যোগ্য ও শিক্ষিত মানবসম্পদ গড়া পরিবেশ থেকে হচ্ছে বঞ্চিত। তাই যতদ্রুত সম্ভব বিষয়গুলি শক্ত হাতে প্রতিহত করাই অধিক শ্রেয় বলে মনে করি। এই ক্ষেত্রে ইউজিসিকে পুরোপুরি কাজের স্বাধীনতা এবং তাদের সুপারিশ মূল্যায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতা একান্ত জরুরী। পাশাপাশি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা ও গুনগত মানের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে লেবাসী বিদ্যানুরাগীদের পরির্বতে পরিচালনা পর্ষদ ও ট্রাষ্টি বোর্ডে অধিক যোগ্যতাসম্পূর্ণ বিদ্যানুরাগী ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের অর্ন্তভূক্তি, শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে তদবিরবাণিজ্য রোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি, অথবা অন্যকোন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় তরফ থেকে বিশেষ মনিটরিং দল প্রেরণ কর্তৃক বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ার সার্বিক তদারকি নিশ্চিত করা জরুরী। সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্টদের তদবির বাণিজ্য বন্ধে নিজেদের তরফ থেকে আরো কঠোর অবস্থান গ্রহণ এবং দলীয় স্বজনপ্রীতি বন্ধ করে আরো অধিক কার্যকরী পদক্ষেপ ও মনিটরিং জোড়দার করা জরুরী। যা শিক্ষার্থীদের যোগ্যতার ভিত্তিতে ভর্তিপ্রক্রিয়ায় বৈষম্য রোধে অধিক জরুরী বলে মনে করি। ।
যদিও আমাদের দেশে যে পরিমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকার কথা তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। ফলে এমনিতেই এদেশের জনগণ প্রয়োজনীয় শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদেশে সীমিত সংখ্যক যেসব ভালো কলেজ রয়েছে তাতেও ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তির আসনসংখ্যা খুবই সীমিত। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেই একই দশা। বর্তমানে আসন সংখ্যা সীমিত থাকার কারণে অনেক ভাল শিক্ষার্থী ভাল ফলাফল করেও তারা আসানুরূপ বা প্রত্যাশিত ভালো কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না। এই বিষয়গুলি শুধুই দুঃখজনকই নয়, ঐসব শিক্ষার্থীর শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়ও বটে। ফলে শিক্ষার্থীরা আকাঙ্খিত কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেরে মানসিক ভাবে দূর্বল হয়ে পড়ে। এরপরেও রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক শ্রেণীর ভর্তি বাণিজ্য, প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের নামে অবৈধ অর্থগ্রহণ, স্বজনপ্রীতিসহ নানাবিধ সমস্যা । এই পরিস্থিতি শিক্ষার্থীর জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ভর্তি হওয়ার জন্য লাখ লাখ শিক্ষার্থী আবেদন করে। তাদের মধ্যে বেশীর ভাগই নানা কারণে এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। মেধাবী দারিদ্র্য শিক্ষার্থীরা ভাল ফলাফল করলেও অনেক সময় অর্থের অভাবে পাশাপাশি ভর্তি বাণিজ্যের কারণেও ভর্তির সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত হয়। শুধু তাই নয় অনেক সময় রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, স্বজনপ্রীতি, কোটাপদ্ধতি থাকার কারণেও অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বর্তমানে ভাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ হারাচ্ছে। পাশাপাশি তারা এদেশে পযাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবেও ভর্তির এবং পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে তারা এক প্রকার হতাশার মধ্যদিয়ে জীবন-যাপন করছে এবং অকালেই শিক্ষা গ্রহনের পথ থেকে ঝড়ে পরছে। যা কখনই কাম্য হতে পারে না।
বর্তমান সরকার বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে শিক্ষার মানন্নোয়নে পাশাপাশি প্রযুক্তিগত ও বাস্তবমুখি শিক্ষার ওপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছে যা সত্যিই প্রসংশার দাবীদার। এখন অনুমোদিত এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ আনায়নে সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিকেই সকল ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন অযোগ্য পরিচালকবৃন্দ ও নামমাত্র শিক্ষক দিয়ে শিক্ষার নামে শিক্ষা বাণিজ্য, ভর্তির নামে অধিক ফি গ্রহণ করতে না পারে। এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের প্রতি আমাদের আহবান শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা দানের ক্ষেত্রে আপনারা সদা সচেষ্ট থাকবে এবং এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এদেশে এক একটি মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবেন। তবেই সরকারের এই ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের স্বার্থকতা পাবে ।
দেশে ব্যবসায়িকরা বা অর্থশালীরা অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করবেন এবং সকলের জন্য শিক্ষা বাস্তবায়ন করবেন এটাই আমরা আশা করি। তবে তা যেন হয় দেশ তথা আপামর জনগণের মঙ্গলে, শিক্ষার বৈষম্য রোধে এবং মানসম্পূর্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে। শিক্ষার নামে অবৈধ অর্থ উপার্জন, শিক্ষার্থীদের শোষন, স্বজনপ্রীতির নামে কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্য ও ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে অবশ্যই নয়। আমরা আরো আশা করবো দেশের নীতি নির্ধারকরা দেশে সরকারি-বেসরকারি যে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও শিক্ষার গুনগত মানন্নোয়নে সকলপ্রকার দুর্নীতি অনিয়মকে বিসর্জন দিয়ে সকলের জন্য একদৃষ্টি সম্পন্ন মনোভাব আনায়নে সদা সচেষ্ট হবেন। পাশাপাশি ব্যবসায়িক বিদ্যানুরাগীদের প্রতি আমাদের অনুরোধ আপনারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করার মন মানসিকতা থেকে বেড়িয়ে এসে সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নে সকল শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একদৃষ্টি সম্পন্ন মনোভাব আনায়নসহ শিক্ষার গুনগত মানন্নোয়নে আতœনিয়োগ করবেন। আর এটি বাস্তবায়ন করতে পারলে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গুলি দেশে উন্নত শিক্ষাদান পদ্ধতি নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি তৈরী এবং উচ্চশিক্ষার সার্বিক বিকাশে কার্যকরী ভ’মিকা রাখতে সক্ষম হবে। যদিও আমাদের সীমিত সম্পদ এর মধ্যেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার মানন্নোয়নে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এবং উক্ত প্রতিবন্ধকতা গুলি যতদুর সম্ভব দূর করতে হবে। মনে রাখতে হবে শিক্ষা দেশ ও জাতির উন্নয়নের জন্য, বাণিজ্যের জন্য নহে। এই নীতি অনুযায়ী দেশে সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একযোগে কাজ করতে হবে। যা এই মুহূর্তে অধিক জরুরী এবং সকলের সদিচ্ছা কামনা করি।
লেখকঃ কলামিস্ট atik@bift.info