রাবির রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল প্রাধ্যক্ষ জান্নাতুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন বাক্যে কথাবলাসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এর আগে ওই প্রাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে হলে থাকার জন্য ভর্তিচ্ছু ছাত্রীদের থেকে ২০টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছিল।RU-provost

পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিকত হলে তিনি টাকা নেয়া বন্ধ করে দেন। ওই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক ভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি।

রোকেয়া হলের একাধিক আবাসিক ছাত্রী জানায়, তারা হলের কোনো বিষয় নিয়ে অভিযোগ করতে গেলে প্রাধ্যক্ষ তাদেরকে পাত্তা দেন না। হলে উঠে প্রথমে গণরুমে সবাইকে থাকতে হয়। এরপর হলে তার জন্য রুমের ব্যবস্থা করা হয়।

তবে গণরুমে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অবস্থান করলেও স্বজনপ্রীতি করে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের একাধিক ছাত্রীদের তিনি রুমের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এমনকি তার ব্যবহারে হলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

RU

এজন্য শিক্ষার্থীরা হলের কোনো বিষয় নিয়ে তাদের কাছে গেলে তারাও এখন ছাত্রীদের পাত্তা দেয় না। এতে করে ওই হলে বেশির ভাগ ছাত্রীরা এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এছাড়াও দীর্ঘ দিন ধরে হলে পানির সমস্যা থাকলেও তা ঠিক করা হচ্ছে না। এতে করে রমজান মাসে শিক্ষার্থীদের নানা কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।

Post MIddle

ওই হলের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হল প্রাধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের সাথে সব সময় খারাপ ভাষায় কথা বলেন। আমারএক বান্ধবী গত কয়েক দিন আগে তাঁর রুমমেটকে নিয়ে প্রাধ্যক্ষের কাছে হলের বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে যায়।

তারা দু’জন হাত ধরাধরি করে প্রাধ্যক্ষের সামনে গেলে তিনি বলেন-‘এই তোদের মাঝে এতো মিল কিসের? তোদের মাঝে অন্য কোনো সম্পর্ক আছে নাকি…..?’ এছাড়াও অনেক ছাত্রীদের সাথেই তিনি বিভিন্ন সময় খারাপ ভাষায় কথা বলেন বলেও জানান ওই শিক্ষার্থী।

ছাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে রোকেয়া হল প্রাধ্যক্ষ জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা। ছাত্রীদের সাথে আমার মা-মেয়ের সম্পর্ক। এসময় তিনি এই প্রতিবেদককে প্রশ্ন করে বলেন, আমি এখন আপনার সাথে কথা বলছি, এখানে কি কোনো খারাপ ভাষা ব্যবহার করার দরকার আছে?

তাহলে অন্য সময় খারাপ ভাষা ব্যবহার করা যায় কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। তবে হলের অন্য অভিযোগগুলো খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি চৌধুরী সারওয়ার জানাহ বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে এমন সম্পর্ক কখনই কাম্য নয়। হলের সমস্যাগুলোর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে তা সমাধানেরও আশ্বাস দেন তিনি।

রাবিতে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা দিতে ছাত্রীদের থেকে রোকেয়া হলে থাকার জন্য ২০ টাকা করে চাঁদা নেয়া শুরু করেন প্রাধ্যক্ষ।

এ বছরের ২১ জানুয়ারি হলে টাকা নেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিক হলে তিনি টাকা নেয়া বন্ধ করে দেন। সে সময়ে ওই ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নজিরবিহীন বলেও উল্লেখ করেছিলেন ছাত্র উপদেষ্টা সাদেকুল আরেফিন মাতিন।

 

তমাল/স:আরএইচ/ইএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট