শিক্ষা মন্ত্রণালয়-ইউজিসির বক্তব্যের বিরোধিতা টিআইবির
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বক্তব্যের পাল্টা বিরোধিতা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বুধবার সংস্থাটি তাদের বিবৃতিতে জানায়, টিআইবি দৃঢ়তার সাথে জানাতে চায় যে, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণাটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণপূর্বক প্রণীত একটি গুণগত গবেষণা।
আলোচিত গবেষণার উদ্দেশ্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হেয় প্রতিপন্ন করা নয় কিংবা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া নয়। বরং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করাই হলো এই গবেষণার উদ্দেশ্য।
বিবৃতিতে বলা হয়, উল্লিখিত গবেষণার তথ্য প্রাথমিক ও পরোক্ষ উভয় উৎস থেকে সংগৃহীত। পরবর্তীতে প্রতিটি ধাপে সামাজিক গবেষণায় বহুল ব্যবহৃত ট্রায়াঙ্গুলেশন পদ্ধতিতে প্রাপ্ত তথ্যের যাচাইকরণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিটি তথ্যের অভ্যন্তরীণ সঙ্গতি এবং প্রাপ্ত অপরাপর তথ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য পরীক্ষার মাধ্যমে তথ্যের গ্রহণযোগ্যতা নির্ণয় করা হয়।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, ২২টি নির্বাচিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, ভিসি, প্রো-ভিসি, সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তথ্য সংগৃহীত হয়েছে।
এর পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে দলীয় আলোচনা এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সমন্বয়ে পরামর্শ সভা নিয়ে প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতেই গবেষণায় ব্যবহৃত তথ্যসমূহ চূড়ান্ত করা হয়।
৩০ জুন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কর্তৃক প্রকাশিত ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে ২২টি নির্বাচিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র উঠে আসে।
গবেষণার বিভিন্ন তথ্যকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অসত্য বললেও প্রতিবেদনে প্রকাশিত প্রতিটি তথ্য সংশ্লিষ্ট খাতের সঙ্গে জড়িত স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকেই সংগৃহীত হয়েছে বলে জানায় টিআইবি।
মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যে আরো বলা হয়েছে, এ গবেষণা বিষয়ে টিআইবি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছে বলে তাদের জানা নেই।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে টিআইবি বিবৃতিতে জানায়, গবেষণার বিভিন্ন ধাপে একাধিকবার মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে টিআইবি’র গবেষকরা সরাসরি আলোচনা করেছেন।
প্রাপ্ত তথ্যের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের প্রয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মঞ্জুরি কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফোনালাপ এবং এসএমএস-এর মাধ্যমে বহুবার যোগাযোগ করা হয়।
সর্বোপরি, ২৭ মার্চ-২০১৪ মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকে টিআইবিকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে লিখিতভাবে তথ্য প্রদান করা হয়।
বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতি বিরোধী প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা অফিস আরো জানায়, টিআইবি’র নীতিমালা অনুযায়ী ব্যক্তির দুর্নীতি বা অনিয়ম নিয়ে টিআইবি কোনো কাজ করে না বা কোনো মন্তব্য করে না। টিআইবি কেবল প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি উন্মোচনে কাজ করে। তাই, গবেষণা প্রতিবেদনেও টিআইবি কোনো ব্যক্তির বিষয় উল্লেখ করেনি।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, টিআইবি আরোও আশা করে, আলোচ্য প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান না করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মঞ্জুরি কমিশন উচ্চশিক্ষা নিয়ে চলমান সুশাসনের ঘাটতি থেকে উত্তরণে কালক্ষেপণ না করে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
স: ইএইচ