ইফতার বণ্টনে অনিয়ম: ঢাবির চার হলে সংঘর্ষ-ভাঙচুর, আহত ৩

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মঙ্গলবার  চারটি হলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

হল প্রশাসনের ইফতার বন্টনে স্বেচ্ছাচারিতা, নিন্ম মানের খাবার পরিবেশন, খাবারের স্বল্পতা ও অশালীন মন্তব্য নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।

du
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থীকে শিবির অভিযোগে মারধর করেছে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আহত শিক্ষার্থীর নাম মোজাম্মেল হক (লোক প্রশাসন, ২য় বর্ষ)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জসীম উদ্দিন হলে ইফতার বন্টনের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে নিজস্ব পরিচয়পত্র জমা দিতে বলেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. রহমতউল্লাহ।

শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড জমা দিলে যারা হলুদ কার্ডধারী অর্থাৎ দ্বৈতাবাসিক তাদেরকে খাবার দেয়া হয় এবং যেসকল শিক্ষার্থী সাদা কার্ড অর্থাৎ অনাবাসিক কার্ড জমা দেয় তাদের কার্ড আটকে দেন হলের প্রোভোস্ট।

এসময় ইফতার সামগ্রি না পেয়ে শিক্ষার্থীরা নিচে বিক্ষোভ করতে থাকেন। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে তারা প্রোভোস্টের কার্যালয় ভাঙচুর করে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, প্রায় দুই’শ শিক্ষার্থী হল থেকে সরবরাহকৃত ইফতার পায়নি।

হল থেকে ইফতার সরবরাহের কথা থাকায় দোকানেও সেদিন ইফতার বিক্রি বন্ধ ছিল। যেকারণে সারাদিন রোজা রেখে শিক্ষার্থীরা ইফতার নিয়ে বিপাকে পরে। ভাঙচুরের সময় প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী আহত হয়।

একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে। হলটিতে খাবার সংগ্রহ করতে গেলে এক শিক্ষার্থীকে ‘ফকিন্নির বাচ্চা’ বলে গালি দেয় হলের হাউজ টিউটর ও বিশ্ববিদ্যায়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন।

Post MIddle

এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় হলের শিক্ষার্থীরা। শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষক আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা হলের মেস ‘ল্যুমিনাস’ ভাঙচুর করে।

শিক্ষার্থীরা জানায় এই হলের দেড় থেকে দুইশত শিক্ষার্থী খাবার পায়নি।
ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে হাজী মুহাম্মদ মহসিন হলে। হলটিতে নিন্ম মানের খাবার পরিবেশন, তার ওপরে খাবারের সঙ্কটে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর প্রোভোস্টের রুম ভাঙচুর চালায়।

এতে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী আহত হয়। হলটিতে এক’শ জনের মত শিক্ষার্থ খাবার পায়নি বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া স্যার এ এফ রহমান হলেও একই ঘটনায় হলের ক্যান্টিন ভাঙচুর করেছে শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে হল প্রশাসন নতুন করে খাবার এনে শিক্ষার্থীদেরকে সরবরাহ করে।

শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীকে মারধর

ইফতারের মান খারাপ হওয়ায় আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থকে মারধর করেছে জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে শাহবাগ থানায় এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জানতে চাইলে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, এক শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রদের কথাকাটাকাটি হলে আমরা তা মিটিয়ে দেই।

কিন্তু তার কিছুক্ষণ পরেই দুই বছর আগে হল থেকে বের হয়ে যাওয়া এক শিবির কর্মী আবার হলে একটা গোলাযোগ বাধানোর চেষ্টা করলে আমরা তাকে পুলিশে সোপর্দ করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলীকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।

স: ইএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট